মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু,,
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে বাংলাদেশ-মায়ানমার ফ্রেন্ডসীপ ব্রিজের বিপরীতে মায়ানমারের অভ্যন্তরে তুমব্রু বিওপি ক্যাম্পের সামনে বিজিবি-বিজিপি অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক সোমবার (২০ মার্চ) সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির লেঃ কর্ণেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী,সাথে ছিলেন লেঃ কর্নেল আলী হায়দার আজাদ, বিজিবিএম, বিপিএম, সেবা-জি+, বিআই উইং কামন্ডার, ঢাকা, লেঃ কর্নেল এসএম তৌহিদুল আলম, পরিচালক (অপারেশন), কক্সবাজার রিজিয়ন, মেজর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পিএসসি, অপস্ অফিসার, কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন এবং ক্যাপ্টেন এস এম সাকিবুর রহমান, এমও সহ ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে মায়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন লেঃ কর্নেল ক্যা নাইংশ অধিনায়ক, বিজিপি কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ মেজর লেই মাইন্ট সহ ২০ সদস্যের প্রতিনিধি।। উক্ত পতাকা বৈঠকে গত ২০১৯ সাল হতে বিজিবি-বিজিপি পর্যায়ে যৌথ টহল বন্ধ রয়েছে, শ্রীর্ঘই বিজিবির পক্ষ হতে সীমিত পরিসরে আপাতত পালংখালী বিওপি হতে তুমব্রু বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্তে যৌথ টহল পরিকল্পনা প্রেরণ করা হবে। প্রতিপক্ষ হতে এ ব্যাপারে তাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত টহলে অংশগ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিজিবির পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাত করার প্রস্তাব করা হলে তারা এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন দপ্তরের আদেশ প্রাপ্তির সাপেক্ষে বর্ণিত সৌজন্য সাক্ষাতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে। বিজিবির পক্ষ হতে মায়ানমার কর্তৃক নির্মিত কাটাতারের বেড়ার কতিপয় ক্ষতিগ্রস্থ স্থানের তথ্য প্রদান করা হলে উক্ত ক্ষতিগ্রস্থ কাটাঁতারের বেড়া উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে পযায়ক্রমে মেরামত করা হবে বলে বিজিপি পক্ষ থেকে জানানো হয়। সীমান্ত এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নের বিষয়ে আলোচনা করা হলে বিজিপি জানায়, সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী/দুস্কৃতিকারীরা ড্রোন উড্ডয়ন করে থাকে। তারা আরো জানায়, যদি কোন ড্রোন মায়ানমার হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, তাহলে বিজিবি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। সম্প্রতি তুমব্রু কোনারপাড়া জিরো লাইন এলাকায় অগ্নি সংযোগের পর এফডিএমএনদের কিছু স্থাপনা রয়ে গেছে যা ভবিষ্যতে সন্ত্রাসীরা আস্তানা তৈরী করতে পারে। তাই উক্ত স্থানের ৩ টি স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে আহ্বান করা হয়। পক্ষান্তরে বিজিপির পক্ষ থেকে জানায়, বিষয়টি তাদের উর্ধ্বতন দপ্তরকে অবগত করবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শূন্য রেখা সংলগ্ন আই ই ডি/মাইন এর অস্তিত্ব প্রসংগে বিজিপি পক্ষ উল্লেখ করে যে তারা কখনও আই ই ডি/মাইন স্থাপন করে না। এক্ষেত্রে উভয় দেশের জনসাধরন সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অবৈধ অনুপ্রবেশ হ্রাস করলে মাইন সংক্রান্ত দূর্ঘটনা হ্রাস পাবে বলে বিজিপি পক্ষ থেকে জানানো হয়। বিজিবি এর পক্ষ থেকে আগামী ২৩ মার্চ ২০২৩ তারিখের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের আহ্বান করা হলে বিজিপি পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে অংশগ্রহণ করবে বলে জনানো হয়।অতঃপর উভয় দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাসহ ভবিষ্যতে সীমান্ত এলাকায় যে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার বিষয়ে উভয় অধিনায়ক একমত পোষণ করেন।সব শেষে বিজিবির পক্ষ হতে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক, স্টাফ অফিসার, ক্যাম্পের সকল সদস্যের জন্য মিষ্টি এবং সৌজন্য উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয় এবং বিজিপি এর পক্ষ থেকে বিজিবি প্রতিনিধি দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে উক্ত পতাকা বৈঠক শেষ হয়।