লোহাগাড়া প্রতিনিধি,
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড পহরচান্দা ছোট ধলিবিলা (হাসনা ভিটা) পাহাড়ী এলাকা থেকে এক প্রবাসীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
১৪ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মাটি চাপা অবস্থায় পাহাড়ি এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে । নিহত প্রবাসীর নাম মনচুর আলম লেদু (২৬)। তিনি পুটিবিলা ইউনিয়নের পূর্ব পহরচান্দা সেকান্দার পাড়ার
ফয়েজ আহমদের পুত্র। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার (২৩),শ্বাশুড়ি সায়রা বেগম (৫৫) এবং শ্যালিকা রুমন্নান আকতারকে (১৫) আটক করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডুবাই থেকে মনচুর আলম লেদু দেশে আসেন। পরের দিন ১ মার্চ তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিঁখোজ হন। এ ঘটনায় তার বোন বুলবুল আকতার লোহাগাড়া থানায় প্রথমে একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন এবং পরে একটি অপরহন মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফুল ইসলাম পিপিএম তদন্ত শুরু করেন এবং ঘটনার ক্লু বের করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, লোহাগাড়া থানার ওসি মুুহাম্মদ আতিকুর রহমান ও পুটিবিলা ইউপির চেয়ারম্যান মুুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মানিক। এসময় থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই যুযুৎসু যশ চাকমা, এসআই শরীফুল ইসলাম পিপিএম, এসআই নুরুন্নবী ও এএসআই আলমগীরসহ সঙ্গীয় ফোর্স এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। নিহতের আত্মীয় মোঃ ফোরকান জানান, লেদু ডুবাই প্রবাসী। কিছুদিন ধরে আর্থিক লেনদেন নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সাথে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়া তার শালিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক চলছিল। এসব বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচার কামনা করছি। নিহতের বড় ভাই খোরশেদ জানান, আমার ছোট ভাই দেশে ফেরার পরের দিন হতে নিঁখোজ হন। তার শ্বশুর বাড়ির পরিবারের সদস্যদের সাথে বিরোধ ছিল। এছাড়া শালিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলে শুনেছি। আমরা এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। পুটিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক জানান, এ ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মনসুর আলী রেমিটেন্স যোদ্ধা ও ডুবাই প্রবাসী। নিঁখোজের আগের দিন আমার সাথে দেখা হয়েছিল। তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সকলের বিচার কামনা করছি। লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুুহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, ডুবাই প্রবাসী, রেমিটেন্স যোদ্ধা মনচুর আলম লেদু নিঁখাজের ঘটনায় তার বোন বুলবুল আকতার একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্লু বের করে আমরা পহরচান্দা ছোট ধলিবিলা(হাসনা ভিটা) পাহাড়ী এলাকা থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রিনা আকতার, শ্বাশুড়ি ছায়েরা বেগম, শালিকা রুমন্নান আকতারকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি শালিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে । সুরুতহালকালে মাথার ডান পার্শ্বে বড় ধরনের কাটা জখম, মৃতের দুই কান, নাক, মুখ এবং থুতনি শরীর হতে কেটে বিচ্ছিন্ন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহৃ লক্ষ্য করা যায়। মামলাটি তদন্তাধীন এবং ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।