প্রদীপ শীল, রাউজান।
রাউজানে বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের গাছের চারা রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বাগানে ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে আগাছা পরিস্কার না করায় শত শত গাছের চারা মরে গেছে। সরোজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়, রাউজান উপজেলার পূর্ব রাউজান, কদলপুর, শমশের পাড়া, উনসত্তর পাড়া এলাকায় বন বিভাগের পাহাড় ও টিলা ভূমির জবর দখল করে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ঘর বাড়ী ও বৃক্ষের বাগান গড়ে তোলেছে। এসব দখল হয়ে যাওয়া ভূমি উদ্ধার করতে নির্দেশ দেন রেলপথ মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। তার নির্দেশে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন ইছামতি রেঞ্জ ১শত হেক্টর ভূমি উদ্ধার করে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় বনজ, ঔষধী ও ফলজ বৃক্ষের বাগান গড়ে তোলা হয়। এই সামাজিক বনায়ন প্রকল্প আলাদা আলাদা ভাবে প্লট করে স্থানীয় লোকজনের সাথে চুক্তি করে উপকারভোগীদের মধ্যে বুঝিয়ে দেয় বন বিভাগ। কিন্তু রোপন করা বাগানে ঝোপঝাড় পরিস্কার পরিচ্ছন করা হয়নি কোন সময়। বৃক্ষের চারায় দেওয়া হয়নি গোবর ও সার। বৃক্ষের চারা পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ না করায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে গড়ে তোলা সামাজিক বনায়নের বৃক্ষের চারা মরে গেছে। সরজমিনে আরো দেখা যায়, বনায়ন প্রকল্পের নাম ফলকে রোপন করা বিভিন্ন ফলজ গাছের নাম থাকলেও বাস্তবে এসব বৃক্ষের চারা রোপন করা হয়নি। কিছু সংখ্যক আকাশমনী ও অল্প আমলকী গাছের চারা দেখা গেছে। এসব গাছ গুলো ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। পূর্ব রাউজান বাগান এলাকার বাসিন্ধা মৃত আমিন শরীফের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার কাছ থেকে চুক্তিপত্রে দস্তখত নিলেও চুক্তিপত্রের কোন কাগজপত্র আমাকে দেয়নি। বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের প্লট। সামাজিক বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সভাপতি লোকমান হোসেন কোম্পানী অভিযোগ করে বলেন, সামাজিক বনায়ন প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত পাঁচ বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশী বরাদ্দ এসেছে। বরাদ্দ পাওয়া টাকা রক্ষণাবেক্ষণে খরচ না করে সব টাকা বন বিভাগের রাউজান ঢালার মুখ ষ্টেশন অফিসার আইয়ুব আলী মন্ডল আত্মসাৎ করেছে। এ ব্যাপরে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জের আওতাধীন রাউজান ঢালারমুখ ষ্টেশন অফিসার আইয়ুব আলী মন্ডলের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক বনায়নের রক্ষণাবেক্ষণে কোন টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আমার বিরুদ্ধে সামাজিক বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সভাপতি লোকমান হোসেন কোম্পানী মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জ অফিসার মোঃ খসরুল আমিনের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ব রাউজান, জঙ্গল রাউজান, কদলপুর, উনসত্তর পাড়া এলাকায় বন বিভাগের মালিকাধীন পাহাড় টিলা ভুমি থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে ১শত হেক্টর জমিতে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্পের প্লট এলাকার বাসিন্ধাদের সাথে চুক্তি করে তাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক বনায়ন রক্ষনাবেক্ষণ কাজের জন্য কোন টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। উপকারভোগীরা সামাজিক বনায়ন প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষন ও পরিচর্যা করার কথা চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে। তারা চুক্তি অনুযায়ী রোপন করা চারা পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ না করায় মরে যাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন এ দায়িত্ব নেবে কে। বন বিভাগ না উপকারভোগীরা।