• রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১০:১৬ অপরাহ্ন

হালদা নদীতে জলজ বাস্তুতন্ত্রের দূষণে দুটি বড় ব্রুড কাতলা মাছের মৃত্যু

সাব এডিটর / ১৬৪ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২

 

প্রদীপ শীল, রাউজান।
প্রাকৃতি মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে গতদিনে দুটি কাতলা মাছ মরে ভেসে উঠেছে। গতকাল ২৬ জুলাই মঙ্গলবার গড়দুয়ারা নয়া হাট এলাকায় ভেসে উঠা মরা মাছটির ওজন ১২ কেজি ২৬০ গ্রাম। এর আগের দিন সোমবার নদীর কাগতিয়া স্লুইচ গেইট এলাকায় ভেসে উঠা মরা মাছটির ওজন ছিল ৯ কেজি এক’শ গ্রাম। হালদা নদী ও মাছ নিয়ে গবেষণা করেন এমন এক বিশেষজ্ঞ গবেষক চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. শফিকুল ইসলাম মনে করেন দুষণজনিত কারণে মাছের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, হালদা নদীর রাউজানের কাগতিয়া স্লইজ গেইট এলাকা থেকে প্রায় ৯ কেজি ওজনের মৃত কাতলা মাছ ও ২৬ জুলাই (মঙ্গলবার) হাটহাজারীর গড়দুয়ারার নয়াহাট এলাকা থেকে সাড়ে ১২ কেজি ওজনের আরেকটি মৃত কাতলা মাছ পাওয়া যায়। হালদায় এক সপ্তাহে ৩টি ডলফিনের মৃত্যু এবং সপ্তাহ না পেরোতে ২ টি কাতলা মাছের মৃত্যু হালদা বাস্তুতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। যা হালদা নদীর বাস্তুতন্ত্রের দূষণকে নির্দেশ করে। তিনি জানান, হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রে রয়েছে ৮৩ প্রজাতির মাছ (ফিনফিশ) ও ১০ প্রজাতির চিংড়ি (শেলফিশ), গাঙ্গেয় ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণি। হালদা বাস্তুতন্ত্র মাছ, গাঙ্গেয় ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণি নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। কিন্তু বর্তমানে হালদা বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্রমশ জলজ প্রাণির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। অতিসম্প্রতি চলতি মাসে হালদা নদী থেকে ৩টি মৃত ডলফিন সংগ্রহ করা হয়েছিল। প্রথমটি ১৪ জুলাই দক্ষিণ গহিরার বুড়ি সর্তা খাল, দ্বিতীয়টি ২০ জুলাই- আজিমারঘাট ও তৃতীয়টি ২১ জুলাই- আজিমারঘাট থেকে। ডলফিন একটি জলজ বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশের নির্দেশক ও প্রতিবেশের প্রহরী ও বলা হয়। ডলফিনের অবস্থা ও সংখ্যা থেকে খুব সহজে জলজ বাস্তুতন্ত্রের দূষণ পরিমাপ করা যায়। আবার একটি বাস্তুতন্ত্রে ডলফিনের সংখ্যার বেশি হলে ঐ বাস্তুতন্ত্রের মাছের পরিমাণ ও বেশি হবে। এছাড়াও হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে ও শাখাখালে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের জাল, বড়শি ও রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত মাছ ধরা হচ্ছে যা হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রের জন্য হুমকি। এমতাবস্থায় আমাদের জাতীয় সম্পদ হালদা নদীর বাস্তুতন্ত্রকে স্বাভাবিক অর্থাৎ মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণির নিরাপদ বাসস্থান গড়ার লক্ষ্যে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড প্রতিরোধে প্রশাসনের পাশাপাশি হালদা সম্পর্কিত সবাইকে আরো বেশি তৎপর হতে হবে। সংশ্লিষ্টদের কিছু প্রস্তাব দিয়ে হালদা বিশেষজ্ঞ ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, হালদা নদীর বাস্তুতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা অর্থাৎ দূষণের মাত্রা জানতে হালদার পানি গুণাবলি পরীক্ষা করে দূষণের উৎস/স্থান নির্ণয় করা জরুরী। হালদা বাস্তুতন্ত্রকে তার চিরচেনা স্বাভাবিকরূপে এবং হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হালদা নদী উপর একাডেমিক অভিজ্ঞ গবেষকদের সম্বনয়ে বিশেষজ্ঞ দল গঠন ও নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে হালদায় অভিযান পরিচালনা করেছেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ সিকদার। অভিযানে হালদার কছুখাইন পয়ন্ট থেকে পাঁচ হাজার মিটার জাল জব্দ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ইউএনও সামাদ বলেন নদীর সর্তাঘাট থেকে হালদার মুখ মোহরা কালুঘাট পর্যন্ত অভিযান করে পাঁচ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা জাল পুড়ে ফেলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories